জাফরুল আহসান সত্তর দশকের প্রথম সারির কবি; তার কবিতায় প্রেম ও প্রকৃতি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়ানো, আঁচল পেতে ধরলে শিউলি ফুলের মতো টুপটাপ প্রেম ঝরে পড়ে। কবিতার সুর ও লালিত্য থেকে প্রেমের চাদর গায়ে জড়িয়ে নেয়া যায়।
কবি কল্পনায় ও বাস্তবে প্রেম করেছেন লুকিয়ে নয় সদম্ভে। লিখেছেনও মনের কপাট খুলে- যেখানে নেই কোনো রাখঢাক, নেই লজ্জা-ভয়ের বালাই, নেই সামলে নেয়ার দায়ও। দাম্ভিক প্রেমিক তাই কত কথাই লিখেছেন কবিতায়।
কবি জাফরুল আহসানের কবি হৃদয় প্রেমময়। তাই দৃষ্টিপাতেই বৃষ্টিপাত। শরীরী আবেগ, উষ্ণতার আস্বাদ, ছুঁয়ে দেখার আবেগ কবিকে সম্মোহিত করেছে; নদীর মতোই নারীকে কবিতার শরীরে বইয়ে দিয়ে জীবনের বিশাল ক্যানভাস জুড়ে প্রেমকে রাঙিয়ে তুলেছেন সপ্তরঙে।
জাফরুল আহসানের কলমের জাদু প্রেমকে বিরহে, দুঃখে, বিষাদে মেখে উপস্থাপন করেছেন যেন প্রেমের নৌকার পাল ঊর্ধ্বমুখী হয় অথচ বিষাদগাঙ ছলকে ছলকে ওঠে, কেঁপে কেঁপে, দুলে-দুলে এগিয়ে যায়। কোথায় কতদূরে কবি বোধহয় নিজেও জানতে চাননি কখনো কোনোদিন।
কবি জাফরুল আহসানের মনে যে লালিত আবেগ, প্রেমের আনন্দ, বেদনা, দুঃখ, ক্রোধ, অভিমানের অপার অভিব্যক্তি, বিচিত্র সুরের মূর্ছনা পাঠককে উতলা করে, চোখে জল এনে দেয়, মনে সাহস জোগায়, সুখের গল্প বলতে শেখায়। পাঠক কিংবা শ্রোতা নিজে যে কথা প্রকাশ করতে পারে না। কবি যেন পাঠককে হাত ধরে ডেকে ডেকে বলেন...দেখো তুমিও আমার মতো মাতাল হয়েছিলে জানতে পারোনি, তুমিও আমার মতো অভিমান করেছিলে বলতে পারোনি, তুমিও আমার মতো প্রকৃতি দেখেছো স্পর্শ করোনি; এসো আমার চোখে আকাশ দেখো।
- শামীম জাহান আহসান