সাজিয়া সুলতানা পুতুল এর এক শিল্পীসত্ত্বার ব্যবচ্ছেদ এবং তার আত্মজীবনীর ভগ্নাংশ অরিজিনাল প্রিন্টেড বইটি সংগ্রহ করুন সরাসরি তাম্রলিপি থেকে। ক্যাশ অন ডেলিভারি সুবিধাসহ অফারনুযায়ী উপভোগ করুন ফ্রি ডেলিভারি এবং সর্বোচ্চ ছাড়!
এক শিল্পীসত্ত্বার ব্যবচ্ছেদ এবং তার আত্মজীবনীর ভগ্নাংশ বইয়ের কিছু অংশঃ
সুর আর শব্দে গড়া আমি। শব্দকে গড়িয়ে নিই সুরে, আর সুরকে গড়িয়ে নিই
শব্দের গা বেয়ে। যেদিন পড়ে থাকবো মর্গে, ভোতা ছুরিকাঁচির কাটাকুটির
অপেক্ষায়, দেখবে যতো কাটা হচ্ছে তো বেরোচ্ছে সুর আর শব্দ। ছুরিটা লক্ষ্য
করলে দেখবে রক্ত নয়, ছুরি ভরে আছে সুরে। সুরে মোড়া ছুরি দিয়ে যতো আঁচড়
কাটা হবে, ততো দেখবে সুর গেঁথে আছে গভীর থেকে গভীরে। সুরে ভরে উঠবে মর্গের
নোংরা কক্ষ। ছুরিতে সুর, কাঁচিতে সুর। আমার শিরা-উপশিরায় সমস্ত সুর তখন
জং-ধরা ওই কাটাকুটির যন্ত্রপাতিতে। যে সুর- বয়ে বেরিয়েছে
আমৃত্যু, মস্তিষ্ক থেকে পায়ের কনিষ্ঠ আঙ্গুল অব্দি, সব সুর তখন
লাশকাটা ঘরের কোণে কোণে আনাচে কানাচে। মর্গ তখন সুরশালা। নেকড়ের মতো একটানে
যখন বুক ফেড়ে রাখা হবে, দেখবে ভিতরে বুদবুদ উঠছে শব্দের।
বড়ো বড়ো শব্দ থেকে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র শব্দে ভরে যাবে হাতের পাতা। হাতের
পাতা বেয়ে ডোমের সারা শরীরে কিলবিল করতে থাকবে আমার হৃদপিণ্ড
নিঃসৃত শব্দের সরলরেখা। যেনো ভুলক্রমে লাল পিঁপড়ার ঢিবিতে পা পড়া, আর
অমনি পিঁপড়া বাহিনীর হামলে পড়া ঢিবি গুঁড়িয়ে দেওয়া আসামীর উপর। তারপর
পা বেয়ে পৌঁছে যাওয়া শরীরের অলিগলিতে। আমার শব্দ তেমনি জড়িয়ে পেঁচিয়ে
রাখবে মর্গ-কক্ষে থাকা জীবন্ত মানুষ, আসবাব আর মেঝেকে। দেখবে মাংস নেই
কোনো। কেবলই শব্দ আর শব্দ। শব্দজাল ঘিরে থাকবে ঝুলে থাকবে কক্ষেক্ষের
দৈর্ঘ্য প্রস্থে। মাকড়সার জালের মতো ময়লারঙা জাল নয়। সে জলের রং রুপালি।
চকচক করতে থাকবে রোদ ঝলসানো নতুন ঢেউ টিনের মতো। তাকিয়ে থাকা যাবে না
শব্দের চোখে চোখ রেখে। অন্ধত্ব গ্রাস করবে দৃষ্টিকে।
একজন শিল্পীর, আজীবন আমৃত্যু সংগ্রাম এক শিল্পীর, সত্তাকে কেটে ছিঁড়ে
উঠে এসেছে যে-বিশ্লেষণ, সেটাই উপজীব্য এই উপন্যাসের। এই রচনা তাই শুধু একটা
উপন্যাস হয়ে নেই, বরং প্রতিনিয়ত-রক্তাত্ত-হতে-থাকা সেই শিল্পীর
আত্মজীবনীর এক টুকরা অংশ বটে।
এই ধরনের অন্যান্য বই দেখুন “উপন্যাস” এবং আমাদের নতুন সব আপডেট পেতে তাম্রলিপি ফেসবুক পেজে ফলো করতে পারেন।