(24/7)

পাঠক সেবা | A Trusted Online Book Shop

আমি কেন খৃষ্টধর্ম গ্রহণ করলাম না?

By আবুল হোসেন ভট্টাচার্য

প্রকাশক : জ্ঞান বিতরণী

মুদ্রিত মূল্য : 150
বিক্রয় মূল্য : 127 (16% ছাড়ে)
Availability :  In Stock
Buy Now

Share This Book

Image Cash On Delivery

Image 7 days happy return

Image Delivery Charge in Dhaka ৳ 50

Image Delivery Charge Outside Dhaka ৳ 100

Image Purchase & Earn

Product Details

Product Summary:

Product Specification:

Book Name আমি কেন খৃষ্টধর্ম গ্রহণ করলাম না?
Author Name আবুল হোসেন ভট্টাচার্য
Publisher Name জ্ঞান বিতরণী
ISBN 9789849010868
Countryবাংলাদেশ
Edition1st Published, 2012
Number of Pages112
Languageবাংলা
ISBN9789849010845

আবুল হোসেন ভট্টাচার্য

আবুল হোসেন ভট্টাচার্য

  • মরহুম আবুল হোসেন ভট্টাচার্য একটি ইতিহাস, একটি অনন্য উদ্যম ও অনুপ্রেরণার নাম।  অদম্য অনুসন্ধিৎসার দীপ্ত উদাহরণ, সত্য ও কল্যঅণের জন্যে আত্মনিবেদনের একটি মহৎ দৃষ্টান্ত।
    সত্যের প্রতি সহৃদয় আকর্ষণ তাঁকে ঘরছাড়া করেছিল।  ধর্মাধর্মের চিন্তা তাঁকে ব্যাকুল করেছিল।  সত্যের মহিমান্বিত আহ্বানকে সবার কাছে পৌছে দেবার জন্যে তিনি ছিলেন সদা সচেষ্ট।
    মরহুম আবুল হোসেন ভট্টাচার্য ১৯১৬ ঈসায়ী সালে বৃহত্তর ফরিদপুর (বর্তমানে শরীয়তপুর) জেলার গোসাইর হাট উপজেলাস্থ দাসের জঙ্গল গ্রামে এক পুরোহিত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  পিতা— শশীকান্ত ভট্টাচার্য।  মাতা— রাঙা বউ।
    ইসলাম গ্রহণের আগে তাঁর নাম ছিল সুদর্শন ভট্টাচার্য। গামের পাঠশালাতেই তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত হয়।  পরে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রী লাভ করেন।
    ১৯৩৭ ঈসায়ী সালে ২১ বছর বয়সে তিনি ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নেন।  তাঁর মুসলিম নাম রাখা হয় আবুল হোসেন।  কিন্তু পৈতৃক পদবী ‘ভট্টাচার্য’ যুক্ত করে তিনি নিজের নাম লিখতেন।  এ প্রসঙ্গে তিনি বলতেন,‘যাঁরা হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করে থাকেন তাঁদের সকলেই হিন্দু জাতির তফসিলী সমপ্রদায়ভুক্ত বলে এক শ্রেণীর হিন্দু লেখক ও বুদ্ধিজীবি অপপ্রচার চালিয়ে এসেছেন।  তাঁদের প্রচারণা যে সর্বাংশে সত্য নয় তা প্রমাণ করবার জন্যে আমি নিজ নমের শেষে ‘ভট্টাচার্য’ পদবী ব্যবহার করি একান্ত বাধ্য হয়েই; বংশীয় পদমর্যাদা বা বাহাদুরী প্রকাশের জন্যে ‘নয়’। বাল্যকাল থেকেই তাঁর মনে বিশ্বস্রষ্টার সংখ্যা সম্পর্কে নানা প্রশ্নের উদার হয়। তিনি যখন স্কুলে লেখা-পড়া করতেন তখন জনৈক মুসলমান শিক্ষকের প্রভাব তাঁর ওপর পড়ে।  সেই শিক্ষক একদা শিশু সুদর্শনকে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন,‘‘কর্তা অনেক হলে গোলমাল বাধে।  সারা জাহানের কর্তা একজনই।  আমরা মুসলমানরা সকল কিছুর মূল হিসেবে একজন কতাকেই মানি। তুমি একনজকেই খুঁজতে চেষ্টা করবে। ”
    সুদর্শন ভট্টাচার্য তাঁর একজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের একটি কথা জীবনে কোনোদিন ভুলতে পারেননি— “তুমি একজনকেই(এক সৃষ্টিকর্তা) খুঁজতে চেষ্টা করবে”। এ মহান উপদেশ তাঁর শিশুমনে শিকড় গেড়ে বসে এবং পরবর্তীতে বিরাটকায় মহারুহে পরিণত হয়।
    কালের চক্র আবর্তিতত হয়।  সুদর্শন ভট্টাচার্যের মনোজগতেও নানান জিজ্ঞাসা প্রবলতর হয়ে ওঠে।  অনুসন্ধিৎসার ব্যাকুলতাই তাঁকে বিভিন্ন খৃষ্টান ও মুসলিম পন্ডিতের সান্নিধ্যে টেনে আনে।  অবশেষে ইসলামী জীবনাদর্শের মধ্যেই তিনি তাঁর সমস্ত জিজ্ঞাসার জবাব খুঁজে পান।
    এক পর্যায়ে তিনি মাওলানা আকরম খাঁ, খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ, মাওলানা মনিরুজ্জামান আরওয়ারী, মাওলানা আব্দুল্লাহিল কাফি আল-কোরায়শি প্রমুখের সান্নিধ্যে আসেন।  তাঁদের পান্ডিত্যপূর্ণ আলোচনা ও পরামর্শ সুদর্শন ভট্টাচার্যকে ইসলাম গ্রহণে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করে।  ইসলাম গ্রহণের পর আবুল হোসেন ভট্টাচার্য রংপুরের মহিমাগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন।
    গাইবান্ধায় অবস্হানকালে তিনি ‘নও মুসলিম তাবলীগ জামায়াত’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন।  কিন্তু তৎকালীন বৃটিশ সরকার ও হিন্দু নেতৃবৃন্দের প্রবল বিরোধীতার দরুণ সে সংগঠনের তৎপরতা অল্পকালের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়।  এরপর তিনি কোলকাতা চলে যান।
    ১৯৪৬ সালে দেশ বিভাগের মাত্র এক বছর আগে তিনি মালদহ জেলায় মহকুমা প্রচার কর্মচারী (Sub-Divisional Publicity Officer)) হিসেবে সরকারী চাকুরীতে যোগ দেন।  ১৯৪৭ সালে ১৪ই আগষ্টের পর তিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের রাজশাহীতে চলে আসেন।
    ১।  বিশিষ্ট শিশু সাহিত্যিক মহফিল হক সাহেবের পারিবারিক সূত্রে জানা যায় যে, আবুল হোসেন ভট্টাচার্য মহমাগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসায় কিছুদিন শিক্ষকতাও করেন।
    সুদীর্ঘ ২৮ বছর যাবৎ অত্যন্ত বিশ্বস্ততা  ও নিষ্ঠার সাথে চাকুরী করবার পর ১৯৭৪ সালে গনসংযোগ কর্মকর্তা (Public Relation Officer)হিসেবে বাংলাদেশ কৃষিতথ্য সংস্থা থেকে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
    ১৯৬৮ সালে ঢাকায় ‘ইসলাম প্রচার সমিতি’ নামে তিনি একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।  তিনি আমরণ এ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাত চেয়ারম্যান ছিলেন।
    ইসলাম প্রচার সমিতি প্রধানত নও-মুসলিমদের মুসলমান সমাজে পুনর্বাসন-কল্পে গঠিত হলে ও আবুল হোসেন ভট্টাচার্য এ সমিতিকে চার দফা কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্যে সমপ্রসারিত করতে থাকেন।  এ চার দফা কর্মসূচী ছিল ঃ (১) নও-মুসলিমদের পুনর্বাসন (২) অমুসলমান-সমাজে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানো, (৩) খৃষ্টান মিশনারীদের উদ্দেশ্যমূলক ভ্রান্ত প্রচারণার মুকাবিলা করে উপজাতীয়দের কাছে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরা এবং (৪) সমাজ সেবামূলক কর্মকান্ড পরিচারনা করা।
    তিনি ১৯৭৮ সালে মক্কা কেন্দ্রীক রাবিতা-ই আল-ইসলামীর তদানীন্তন সেক্রেটারী জেনারেল মরহুম শেখ মুহাম্মদ আলী আল-হারাকানের আমন্ত্রণক্রমে পবিত্র হজ্ব সম্পন্ন করেন।  এর আগে তিনি একই বছর Muslim World League  আয়োজিত করাচীতে অনুষ্ঠিত প্রথম এশিয় ইসলামী সম্মেলনে যোগদান করেন।  এরপর একই সংস্থা কর্তৃক কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় এশীয় ইসলামী সম্মেলনে অংশ গ্রহণের জন্যে তাঁকে দাওয়াত দেওয়া হয়।  কিন্তু অনিবার্য কারণে তদানীন্তন সরকার তাঁকে সে সস্মেলনে অংশ গ্রহণের অনুমতি দেননি।  সে বছর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান থেকে তাঁকে ইরান সফরের দাওয়াত দেয়া হলে একই কারণে সে সফরও বাতিল হয়ে যায়।  নানা বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও তিনি এদেশের লক্ষ লক্ষ অমুসলমানের মধ্যে ইসলামের দাওয়াত পৌছানোর মহৎ কর্মে সর্বান্তকরণে নিয়োজিত ছিলেন।  প্রায় প্রতিদিনই দু-একজন অমুসলমান তাঁর পবিত্র হাতে বয়াত গ্রহণ করে ইসলামের পতাকা তলে সমবেত হতো।  কিন্তু আল্লাহ তায়ারার অমোঁঘ আহবানে তিনি এতো তাড়াতাড়ি আমাদের কাছ থেকে চলে যাবেন এতটা আশা কেউ কিরিনি।
    ১৯৮৩ সালের ২৬শে জানুয়ারী দিনাজপুরের রাণীর বন্দর থেকে ঢাকা ফেরার পথে পাবনার সমাসনারীতে তাঁর জীপটি দুর্ঘটনা কবলিত হলে অন্যান্য সহযাত্রীদের সাথে তিনিও মারাত্মকভাবে আহত হন।  সম্পূর্ণ অজ্ঞান অবস্হায় তাঁকে ঢাকার পিজি হাসপাতালে পরের দিন ভর্তি করা হয়।  কয়েকদিন পিজিতে চিকিৎসাধীন থাকার পর কিছুটা  সুস্হ মনে হলে তাঁকে কলাবাগানস্হ বাসায় আনা হয়।  কয়েকদিন পর আবার তাঁর স্বাস্হ্যের অবনতি ঘটলে তাঁকে ঢাকার মোহাম্মদপুরস্থ রাবিতা মেডিকেল সেন্টারের ভর্তি করা হয়।  এখানেই তাঁর জীবনসায়াহৃ ঘনিয়ে আসে।
    ১৯৮৩ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারী শুক্রবার দিবাবসানের সাথে সাথে এ মহান দ্বীনি খাদেম ইন্তেকাল করেন।  তাঁর ইন্তেকালের খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে অন্যান্যদের মত এদেশের হাজার হাজার নও-মুসলিম বুক ফাটা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।  হারিয়ে ফেলে তাঁদের পিতৃতুল্য একজন প্রিয় অভিভাবককে।
    পরের দিন ১৯শে ফেব্রুয়ারী প্রথমে কলাবাগান খেলার মাঠে ও পরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমে তাঁর সালাত-ই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।  ছায়াঘেরা বনানী গোরস্থানে তিনি এখন চিরনিন্দ্রায় শায়িত।
    তিনি আর কখনো ছুটবেন না কোনো দুঃস্থ নও-মুসলিমের মনের কথা শোনবার জন্যে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া।  দেবেননা কাউকে সত্যিকার মুসলমান হয়ে গড়ে ওঠবার উপদেশ।  তবে তাঁর মূল্যবান রচনাসমূহে আমরা খুঁজে পাবো সত্য ও কল্যাণের পথে চলবার দিক নিদেশ না আর সত্যিকার অর্থে মানুষ হয়ে গড়ে ওঠবার সুপরামর্শ।
    তাঁর দাওয়াতী কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ তাঁকে ১৯৮৪ সালে ইফা পুরস্কার (মরনোত্তর) প্রদান করে সম্মানিত করেন।
    তিনি যেন সু-বক্তা  বিদগ্ধ সমালোচক ছিলেন তেমনি একজন শক্তিমান লেখকও।  তিনি ছোট-বড় প্রায় ২০ খানা পুস্তকের রচয়িতা।  তাঁর এ সমস্ত রচনার প্রায় সবগুলোই ইসলাম ও অন্যান্য ধর্ম সম্পর্কে বিশ্লেষণ মূলক।  তাঁর এসব বিশ্লেষণ ধর্মী ও সুচিন্তিত রচনা খুব সহজেই শুভানুধ্যায়ী পাঠকের মন কেড়ে নেয়।

Home
Categories
Cart
Account