বাবা-মায়েরা যখন বাচ্চাদের দুষ্টুমির কথাগুলো আলোচনায় আনেন, তখন সাধারণত এমন ভাবে বলেন যেটা শুনে মনে হবে ওদের সব অগোছালো আচরণের একমাত্র কারণ ওরাই! “”ওরা জেদী, কথা শুনতে চায় না, বাবা-মায়ের কষ্ট বুঝে না, বাবা মাকে কখনো কাজে সাহায্য করেনা, ওরা সবসময় মনে করে বাবা-মা দুনিয়াতে আছেই ওদের সব চাহিদা পূরণ করার জন্য। বাচ্চাগুলো এমন করে কারণ ওরা দুষ্টু, ওরা ভালো না! সমস্যা ওদের, আমাদের তো না। আমরা তো ভালো বাবা-মা। আমরা তো ছোটবেলায় এমন ছিলাম না।””
এই বইটি ধারণা দেবে- আমরা নিজেরা নিজেদেরকে ভালো বাবা-মা , আর ওদেরকে দুষ্টু বলে আখ্যায়িত করলেও , আমাদের সন্তানদের সকল সমস্যার নেপথ্যে অন্যতম ভূমিকা আমাদেরই। প্রকৃত দুষ্টু আসলে ওরা না।
এটা একটা রূপক নাম।
সকল প্যারেন্ট কে সতর্ককারী সেই হাদিসখানা উল্লেখ করা হলো…..
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল ﷺ ইরশাদ করেছেন, “প্রত্যেক নবজাতকই ফিতরাতের উপর জন্মলাভ করে। অতঃপর তার পিতামাতা তাকে ইয়াহুদী, নাসারা বা মাজূসী (অগ্নিপূজারী) রূপে গড়ে তোলে। যেমন, চতুষ্পদ পশু একটি পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাকে কোন (জন্মগত) কানকাটা দেখতে পাও?” অতঃপর আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিলাওয়াত করলেন, ‘আল্লাহর দেয়া ফিতরাতের অনুসরণ কর, যে ফিতরাতের উপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন, এটাই সরল সুদৃঢ় দ্বীন।’ (সূরা রোম আয়াত ৩০) সহীহুল বুখারী ১৩৫৯ সহীহ মুসলিম ৪৬/৬ হাঃ ২৬৫৮
এই বইটিতে আমাদের সন্তানদের জন্য প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
আমরা সবাই জানি ভালো কাজ করা ভালো, খারাপ কাজ করা খারাপ। আলোচনায় এই তাত্বিকতা কে একপাশে রেখে কিভাবে ভালো বৈশিষ্ট্যগুলোকে ধারণ করা সম্ভব সেদিকটায় গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
আমি জানি ,প্যারেন্টিং সম্পর্কে আলোচনা করা, আরেকজন প্যারেন্ট কে উপদেশ দেওয়া অনেক সহজ। কিন্তু কচিকাঁচা গুলোকে নিয়ে যখন আমরা কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখিন হই ,তখন নিজের সমস্ত ভালো দিয়ে খারাপ কে অপসারণ করা চারটি খানি কথা না । নিজেরাই আর ঠিক রাখতে পারিনা নিজেদেরকে। যা চায় না ,তাই করে বসি।
প্যারেন্টিং এর এই শাশ্বত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা নিঃসন্দেহে কঠিন। আপনার এই কঠিন দায়িত্ব পালনে যদি একটু সাহায্য হয়………